°সাইকো° নিয়ে কেন এত মাতামাতি? | Psycho Movie Bangla Review

দুর্নীতি দলের ৬ মাস্টারমাইন্ড অপরাধীকে নিয়ে গড়ে ওঠা একদল *সাইকো * ইংরেজি শব্দটির প্রথম অক্ষর বাদ দিয়ে প্রতিটি অক্ষর দিয়ে রয়েছে একজন করে সদস্যের নাম আর প্রথম অক্ষর যার জন্য বরাদ্দ তিনি এই দলের মূল হোতা।

যিনি সবার মাথা তাকে কেউ কখনো দেখেনি, ভয়ংকর ও শক্তিশালী ব্যক্তি নিজেকে পি সিক্স নামে সবার কাছে পরিচয় দেন। তিনি যেহেতু সবার সামনে আসেন না সেহেতু তিনি অডিও বার্তার মাধ্যমে নিজেকে পরিচয় দেন।

এই ৬ জন মিলে দেশের নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে থাকেন, খুব ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে গল্পটা চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক আসলে কতটা ইন্টারেস্টিং।

বুঝতেই পেরেছেন আজকে আমরা কথা বলবো *সাইকো* সিনেমা নিয়ে।

গল্প তো শুরুতেই কিছুটা বলেছি সাইকো কিংবা p6 দলের কথা, আসলে পি সিক্স কখনো ব্যক্তির নাম সিনেমায় আবার কখনো দলের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

তাই এখানে কিছুটা কনফিউশন আছে তবে এখানেই শেষ নয় এখানে কনফিউশনের শুরু যাই হোক এই পি ৬ দলের সঙ্গে ঘটনাক্রমে জড়িয়ে পড়েন এক দক্ষ কিন্তু সাসপেন্ডেড পুলিশ অফিসার রকি।

কিভাবে জোড়িয়ে পড়ে সেটা বলছি।

ওদিকে আবার এক মন্ত্রীর সুন্দরী মেয়ে জাহানকে কিডন্যাপ করে দুর্বৃত্তরা শুরুতে প্রশ্ন এই একটাই থাকে যে কে জাহানের কিডন্যাপার?

যা জানতে ডাক পড়ে পুলিশ অফিসার রকির, গল্পের শুরু টা ঠিক এমন কিছু সাসপেন্স আর উত্তেজনাকর ঘটনা দিয়েই শুরু হয় তবে এর পরে সব এলোমেলো।

কমার্শিয়াল সিনেমার জন্য ইন্টারেস্টিং একটা গল্প ঠিক ই বেছে নিয়েছেন নির্মাতা তবে তা গতানুগতিক ধারাতেই কিন্তু পড়ে যায়।

কাহিনী কার ভুলে গেছিলেন এটা ২০২২ এখন দর্শক নতুনত্ব চাই।
তারপরও যদি একটা শক্তিশালী চিত্রনাট্য হতো তাহলে হয়তো নিঃসন্দেহে একটি মসলাদার কামার্শিয়াল সিনেমা হতো। কিন্তু চিত্রনাতে বেশ কিছু লুফল আছে।

এক দৃশ্য সঙ্গে আরেক দৃশ্যের কোন মিল নেই, দৃশ্য কোথায় শুরু হচ্ছে কোথা থেকে শুরু হচ্ছে আবার কোথায় শেষ হচ্ছে এটার মধ্যে কোন যোগসূত্র নেই তার কারণ এ গল্পে অনেক কনফিউশন তৈরি হয়।

আর তাছাড়া দর্শক ধরে রাখার জন্য নির্মাতা টুইস্ট ধরে রাখতে পারেননি, যেমনটা বলছিলাম সিনেমার শুরু কিন্তু অনেক সাসপেন্স দিয়ে হয়েছে ইন্টারেস্টিং একটা গল্প দিয়ে।  কিন্তু সিনেমার শুরুর ঠিক আধা ঘন্টার মধ্যে সবচেয়ে বড় যে দুটি টুইস্ট সিনেমার সেটা খুব সহজেই দর্শক বুঝে যায়।

কারণ মানে এখানে আমার মনে হয়েছে যে সিনেমার নির্মাতা সবথেকে বড় বেন ডার্টি করেছেন।

এছাড়া সিনেমার ডায়লগ রাইটিং ছিল খুবই দুর্বল আর সিনেমার প্রধান দুই চরিত্র রোশান ও পূজার পোশাক ডিজাইনের ছিল গন্ডগোল। বিশেষ করে পূজার, পুজা যথেষ্ট সুন্দর একটা নায়িকা তাকে স্ক্রিনে অসম্ভব সুন্দর লাগে।

এই সিনেমায় লিখেছি আমরা এর আগে সান এ দেখেছি পূজা নিজেকে কি সুন্দর করে প্রেজেন্ট করেছেন।
কিন্তু এই সিনেমায় তার পোশাক বড্ড বেমানান এবং খ্যাত খ্যাত লেগেছে কিন্তু এদিক দিয়ে আলাদা করে নজর কেটেছেন কিন্তু আবার রোজী সিদ্দিকী।

রোজা সিদ্দিকী সিনেমা পূজার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাকে স্ক্রিনে খুবই সুন্দর লেগেছে। তিনি শাড়ি পরেছিলেন তাকে যথেষ্ট মার্জিত এবং রুচিশীল লেগেছে।

সিনেমার কোথাও কোথাও চরিত্র গুলোর ঠোঁট মেলেনি। এই সমস্যাটি মনে হয় বাংলা সিনেমার নির্মাতাদের আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত।
এই সমস্যাটা কেন জানি থেকেই যাচ্ছে ডাবিং এ আমার মনে হয় আরো মনোযোগী হওয়া উচিত।

সেই সঙ্গে সাইকো সিনেমায় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও সেরকম ভাবে মনোযোগ কাড়তে পারেনি।

এই সিনেমা দেখে সবচেয়ে বেশি আমাদের কাছে যে খটকা লেগেছে সেটা হচ্ছে একটা সময় কিন্তু ছিল যেখানে বাংলা সিনেমায় নারীদেরকে পুরোপুরি পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

এটা স্বীকার করতে এখন আর আমার কোন বাধা নাই আপনাদেরও থাকার কথা নয়। সিনেমার পোস্টার থেকে শুরু করে গান কিংবা কমেডি চরিত্রে একজন নারীকে অহেতুক যৌনতার প্রতীক হিসেবে দেখিয়ে তাদেরকে অবোমানোনা করা হতো।

এখনো যে সেটি হচ্ছে না তা কিন্তু নয়, তবে বাংলা সিনেমার সেই অহেতুক অশ্লীলতার সেই ভয়াবহ বিপর্যয় অনেকটাই কিন্তু কেটে গেছে।

এরপরও যখন সিনেমায় একজন নারীর চরিত্র কেবল একজন।
পুরুষ শিল্পের সঙ্গী হিসেবে দেখানো হয়, কিংবা গানে আবেদনময় কাপড় পরে পুরুষকে আকর্ষণ করতে।
কিংবা অহেতুক অপ্রাসঙ্গিক কোনো যৌনতার দৃশ্য নারীকে ব্যবহার করা হয় তখন এটাকে মানে খুবই হতাশাজনক ই বলতে হয়।

সাইকো সিনাময় কিছু অংশে নারীদেরকে এরকম আমার কাছে মনে হয়েছে পণ্য হিসেবে দেখানোর চোখে পড়েনি।
আশা করছি নির্মাতা পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরো সতর্ক হবেন।

এবার জানাই এত কিছুর পরেও কেন দেখবেন সিনেমাটি?

শুরুতেই যেটা বলতে হয় অভিনয় নিয়ে পূজা চেরি একজন ভালো অভিনেত্রী এটা আমরা জানি, তিনি আগেও অনেক ভালো কাজ করেছেন। সবসময় নিজেকে চরিত্রের সাথে মিশিয়ে নেন এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

পূজা অনেক ভালো অভিনয় করেছেন, তিনি তার পুরোটা দিয়েই কাজ করেছেন। তবে আমরা চাইবো পূজা যেন স্ক্রিপ্ট বাছায়ের ক্ষেত্রে সামনে আরো মনোযোগী হয়।

একি ই আসা থাকবে নায়ক জিয়াউর রোশন এর কাছ থেকে তাকে সিনেমায় অনেক ভালো লেগেছে, ইনফ্যাক্ট সব থেকে বেশি সুদর্শন কিন্তু রোশনকেই লেগেছে। একদম পুরোদস্তুর একজন নায়ক হিসেবে সফলভাবে নিজেকে স্ক্রিনে তুলে ধরেছেন।

তবে অভিনয় আর এক্সপ্রেশনে কিছুটা শান দিলে হয়তো বাংলা সিনেমার নেক্সট বিগ হিটের খাতায় নিজের নাম লেখাবেন এই নায়ক আশা করি নির্মাতারাও তাকে পরবর্তীতে সৎ ব্যবহার করবেন।

এছাড়া পর্দায় পূজার রসুনকে একসাথে দেখতে ভালো লেগেছে , তাদেরকে কেমিস্ট্রি অনেক ভালো লেগেছে গানগুলো খুব সুন্দর ছিল। ক্যামেরার কাজও খুব সুন্দর হয়েছে, একদম ঝা চকচকে সিনেমাটোগ্রাফি।

নেপালে তারা গানের শুট করেছে যেটা খুবই সুন্দর লেগেছে দেখতে, তবে নায়ক নায়িকার ওই পোশাক কিন্তু গানে খুবই চোখে লেগেছে।

এত দারুন লোকেশন ছিল রোমান্টিক বাংলা বা বাংলা সিনেমা গান প্রেমীদের মনে একটু হলেও দোলা দেবেই।

আর তাছাড়া টাইটেল ট্রাকে পূজার যে একটা ডান্স নাম্বার ছিল আমি সাইকো নামে যে টাইটেল ট্রাকটা ছিল।
সেটার জে ডান্স নাম্বার ছিল সেখানেও পূজা চেরি যথেষ্ট পরিমাণ পরিশ্রম করেছে তা কিন্তু চোখে পড়ে।

এছাড়াও শহীদুজ্জামান সেলিম একজন ন্যাচারাল অভিনেতা। তিনি পূজার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
তবে এই সিনেমায় তার প্রতীকটা ডায়লগকে বেশ ওভার এক্সাইটেড লেগেছে তাকে। তিনি বেশ উৎস স্বরে ডায়লগ ডেলিভারি দিচ্ছিলেন।

তবে এই ব্যাপারটার একটা এক্সপ্লোশন হতে পারে যেহেতু তিনি সিনেমায় একজন রাজনৈতিক কর্মকর্তা মানে একজন রাজনৈতিক নেতা। তাই তার কথার মধ্যে সেই নেতৃত্বের ভাব তুলে আনতে হয়তো এমনটা দেখানো হতে পারে।

এর কারণ হলো তিনি অসাধারণ অভিনয় করেন এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, আমরা কিছুদিন আগে পরানে তার খুবই সাবলীল এবং ন্যাচারাল অভিনয় দেখেছি।
যেটা পুরো হলের দর্শক খুবই পছন্দ করেছেন সেখানে ই মিম এর বাবার চরিত্রে কাজ করেছিলেন।

এছাড়াও রোজী সিদ্দিকী জিনিস সাইকো সিনমায় অভিনয় করেছেন। সুব্রত তারা সবাই খুবই সাবলীল অভিনয় করেছেন।

সিনেমার বড় একটা অংশ জুড়ে কিছু পার্শ্ব অভিনেতা ছিলেন, যাদের অধিকাংশই এমিচার পারফরম্যান্স দিয়েছে।

বড় স্ক্রিনে এত জনপ্রিয় নির্মাতা এবং অভিনয় শিল্পীদের সঙ্গে যখন কাজ করছেন। তখন আমার মনে হয়।

আরো দক্ষ শিল্পী বেছে নেয়া উচিত। মানে নতুন হোক তবে শিখে কাজটা করা উচিত।

এছাড়া নতুন হিসেবে কিন্তু আসা জাগা নিও কাজ করেছেন দুইজন একজন ছিলেন ফারহান এবং আরেকজন ছিলেন সঙ্গীতা দত্ত।
তাদের পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালো লেগেছে চর্চা করলে সামনে তারা আরো আরো ভালো করতে পারবেন।

এছাড়াও সিনেমায় একটা সোশ্যাল মেসেজ দেয়া হয়েছে, ক্ষমতা আর দুর্নীতির কবলে পড়ে অসহায়েরদের শিকার হন সাধারন জনগণ। আপাতত দৃষ্টিতে যা ধরা না পড়লেও। এসব ঘটনা আমাদের সমাজে হওয়ার হামেশাই হচ্ছে।

এবং এই বিষয়টি খুবই সুন্দরভাবে সিনেমায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

সবশেষ বলতে চাই সিনেমার বিভিন্ন দিক আমার দৃষ্টি থেকে আমি বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি, আমার মতামত দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এতক্ষণ যা যা বলেছি সবই আমার ব্যক্তিগত মতামত।

আপনাদের ভিন্ন মত থাকতেই পারে ভিন্ন মত থাকবেই তবে অবশ্যই, আপনাদের সিনেমাটি কেমন লেগেছে সেই কথাটি আমাকে জানাবেন সিনেমা হলে গিয়ে টিকিট কেটে সিনেমাটি দেখে।


YouTube Monetization Offer
৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম এবং ১০০০ সাবস্ক্রাইবার নিন মাত্র ৩০৯০ টাকায়। ১০০% সেভ ওয়ে।✅
Contract Facebook: Click here

আর আপনাদের সুন্দর একটি অনুভূতি জানাবেন “সাইকো” সিনেমাটি কেমন লাগলো। আজকের মত এখানে ই শেষ করছি আশা করছি খুব শিগগিরই নতুন কিছু নিয়ে হাজির হচ্ছি সেই পর্যন্ত সাথেই থাকুন ট্রিকবিডির ধন্যবাদ।❤

The post °সাইকো° নিয়ে কেন এত মাতামাতি? | Psycho Movie Bangla Review appeared first on Trickbd.com.

 °সাইকো° নিয়ে কেন এত মাতামাতি? | Psycho Movie Bangla Review

Marzuk Neil

জানতে চাই এবং অন্যকে জানাতে চাই✨ তাই বাংলা টেকনোলজি বিষয়ক এই ব্লগটি খোলা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form